নিশীথ রাতের গোপন গল্প — *“ভয়াল বাসররাত”*
*(একটি ১০০০ শব্দের বাংলা হরর গল্প)*
---
**১. শুরুটা স্বপ্নের মতো…**
রিমি আর আদিত্যের বিয়ে হয়েছে ঠিক এক সপ্তাহ আগে। প্রেমের সম্পর্কটা ছিল প্রায় তিন বছর, তারপরে পরিবারে রাজি হয়ে বিয়ে। বিয়ের পরে তারা আদিত্যের গ্রামের বাড়িতে এসেছে – একটি পুরনো জমিদার বাড়ি, প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। বাড়িটার চারপাশে অনেক গাছগাছালি, যেন পুরো গ্রামটা ওদের বাড়ির ভেতরেই ঢুকে পড়েছে।
“বাড়িটা ভয়ঙ্কর সুন্দর, না?” রিমি বলল।
আদিত্য হেসে বলল, “এই বাড়িতে আমার ঠাকুরদা একা থাকতেন। অনেক গল্প আছে এই বাড়ি ঘিরে। তবে ভয় পেও না।”
**২. নিঃসঙ্গতার ছায়া**
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে রিমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিল। হঠাৎই তার চোখ পড়ল এক বৃদ্ধার দিকে — সাদা শাড়ি, অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ঘরের দিকে। সে মুহূর্তেই চোখ সরিয়ে নিল। ফিরে তাকানোর পর কেউ ছিল না।
“আদিত্য, তুমি দেখেছিলে? ওই বুড়ি মহিলা?”
“কে? আমি তো কিছু দেখিনি।”
কিন্তু রিমির মনে হচ্ছিল, কিছু একটা ঠিক নেই। যেন কেউ তাকে দেখছে, ধীরে ধীরে কাছে আসছে।
**৩. প্রথম রাতের বিভীষিকা**
রাত প্রায় ৩টা। হঠাৎ একটা কোলাহল শুনে রিমির ঘুম ভেঙে গেল। দরজার বাইরে কার যেন পায়ের শব্দ। সে ধীরে দরজার দিকে গেল। দরজা খুলে দেখল — লাল সিঁদুরে ভেজা এক মহিলা দাঁড়িয়ে, চোখ দুটো রক্তবর্ণ, ঠোঁটের কোণে হাসি।
“আমি এসেছি তোমার জন্য…”
রিমি চিৎকার দিয়ে ঘুম ভেঙে ওঠে। আদিত্য পাশে, ঘুমোচ্ছে। দুঃস্বপ্ন ছিল ভেবে নিজেকে শান্ত করল।
**৪. রহস্য উন্মোচন**
পরের দিন গ্রামের এক বৃদ্ধা রিমিকে দেখে বলল,
“এই বাড়িতে আবার কেউ উঠেছে নাকি? সাবধানে থেকো মা। তোমার মতো এক নববধূ বহু বছর আগে… এখানে… হারিয়ে গিয়েছিল।”
“মানে? কী হয়েছিল?”
“ওই ঘরেই ওর বাসর হয়েছিল… আর তারপর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বলে, ওর আত্মা এখনও এখানে ঘোরে…”
রিমির গলা শুকিয়ে গেল। সে বুঝতে পারল, এই বাড়ি কেবল পুরনো নয়, কোনো গোপন অভিশাপও লুকিয়ে আছে।
**৫. আতঙ্ক ঘনিয়ে আসে**
রিমি সিদ্ধান্ত নিল, সত্যি জানতেই হবে। সে রাতের বেলা পুরনো দালানের দিকে গেল। সেখানে গিয়ে খুঁজে পেল একটি পুরনো আয়না। আয়নার সামনে দাঁড়াতেই দেখা গেল অন্য এক চেহারা — তার মতোই দেখতে, কিন্তু চোখে শূন্যতা।
“তুমি তো আমার জায়গা নিয়েছো… এখন আমি তোমারটা নেবো…”
আয়না ভেঙে গেল, এবং সেই ছায়াটি বেরিয়ে এলো।
**৬. শেষের শুরু**
রিমি দৌড়ে আদিত্যকে ডাকতে গেল, কিন্তু ঘরে ঢুকেই থমকে দাঁড়াল। আদিত্য ছটফট করছে, মুখে অদ্ভুত বিকৃততা। আর বিছানার একপাশে সেই নারী — সিঁদুরে রাঙা, চোখে আগুন।
“আমাকে যে কথা দেওয়া হয়েছিল, আমি ফিরব… তোমাদের ভালোবাসার বিনিময়ে।”
রিমি চিৎকার করে বলল, “তুমি কী চাও?”
“শুধু… তোমার শরীর… আর আমার বাসররাত শেষ করতে…”
**৭. ভয়াল বাসররাত**
হঠাৎ চারদিক অন্ধকার হয়ে গেল। রিমি দেখল সে শাড়ি পরে আছে, মনের অজান্তেই তার কপালে সিঁদুর, গলায় মঙ্গলসূত্র। সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে — কিন্তু আয়নায় সে একা নয়, তার পাশে সেই রক্তচক্ষু নারী।
“এবার আমার পালা…”
সেই রাতে আর কেউ রিমিকে দেখেনি। সকাল হলে, আদিত্যকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেল। সে বারবার একটা কথাই বলছিল—
“রিমি… আয়নায় হারিয়ে গেছে… ওর চোখ ছিল না… ওর ছিল শুধু ভয়…”
**৮. আজও…**
এই গল্প এখনো ছড়িয়ে আছে গ্রামের মানুষদের মুখে মুখে। বলা হয়, সেই পুরনো ঘরে যদি কোনো নববধূ প্রথমবার রাত্রিযাপন করে, তবে আগের সেই আত্মা ফিরে আসে… তার বাসর শেষ করতে।
আর আয়নায় কেউ যদি রিমিকে দেখে — সে যেন চোখের দিকে না তাকায়।
কারণ, তার চোখে আছে…
শুধু… **ভয়।**
---
চাইলে আমি এই গল্পের একটি পোস্টার বা গল্পের ধারাবাহিক ভিডিও সিরিজের আইডিয়াও তৈরি করে দিতে পারি। তুমি কি কোনো নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে এটি ব্যবহার করতে চাও?

No comments:
Post a Comment